প্রেম তুমি থেকো
আবদুল হাকিম
ক্লার্কস লেইন, বাল্টিমোর, ইউ এস এ
[কবিতাটিতে ঈ, ঊ, ণ, ং, শ –এ পাঁচটি অক্ষর ব্যবহার করা হয়নি]
অনামিকায় অঙ্গুরি।
তুমি থেকো।
কপোলে কুন্তলে মদির দৃষ্টি।
তুমি থেকো।
কবরিতে লটকে থাকা হঠাত,
বসন্তের আমের বোল।
তুমি থেকো।
সিসির ভেজা নিটোল পায়ে,
লুটিয়ে পড়া সাড়ির আচোল।
তুমি থেকো।
আমার আর হোলনা থাকা।
প্রেম। তুমি ভেবনা।
ওরাতো রইলো।
***
আকাশ
অরুণোদয় কুণ্ডু
পুরোটা তো যায়না ;
তার ঝাপসা ছবি আছে আঁকা
মুখোমুখি যখন হয় আয়না ।
ঝাপসা থেকে অদৃশ্যের খোঁজে
তার প্রতিদিনের পথচলা ।
জানলায় আজ গরাদ লেগে গেছে ;
সপ্তর্ষি বইয়ের পাতায় ভোলা ।
মনের হাওয়ায় অক্সিজেন কম ;
চশমাটা আজ আলকাতরা মাখা ।
চাঁদ মামাও নিয়েছে অবসর ,
বিহঙ্গ আজ বন্ধ করেছে পাখা ।
গলা টিপে ধরছে এসে কংক্রিট জেলখানা ;
ফেরারী মন ব্যাস্ত খোঁজে একটা আস্তানা ।
যেথায় দুচোখ দেখবে শুধু আকাশ শামীয়ানা ।
***
বাইশে শ্রাবণ বেদানুজ চক্রবর্তী |
|
বাইশে শ্রাবণ কেন ফিরে ফিরে আসে, রবীন্দ্রনাথ ? কেন নারীর মতন , জীবনের প্রতি দণ্ড পল জড়িয়ে জড়িয়ে রাখে ? চলে যায়, দূরে দূরে চলে যায়.. আবার আগন্তুক নদী ; আবার ফিরে ফিরে আসে সেই বিষণ্ণ সময় আমি তো নীলকণ্ঠ নই তোমার মতন। আমার শরীর জুড়ে বিষ পিঁপড়েরা খেলা করে; সেই রাত মনে পড়ে যায় .. আধেক ঘুমে শুনেছিলাম কার চাপা স্বর কে যেন সরে গেল, চলে গেল চাঁদের আলোয়.. শান্তিনিকেতনেও , উত্তরায়ণের বারান্দায় জোব্বা পরা তোমার শিল্যুয়েত। শমী চলে গেল। সেদিন বৈতালিকে কান্না নয়, গান শুনে ছিলাম। তুমি নূতনের গান গাও। টিভি তে, সিডি তে, আকাশবানীতে, জলে , স্থলে, অন্তরীক্ষে । আমি শুনি। আমার শরীরে বিষ পিঁপড়েরা অনায়াস সংসার পাতে । এই তো ক’দিন আগে চলে গেল মৃণালিনী, - ছুটি, তোমার সন্তানের জননী। তোমার পত্রাবলী কি অনায়াস সংযমে জানাচ্ছে সে কথা। কি করে পারলে তুমি ? জীবন দেবতা ছিল বলে ? সেই কি বর্ম হয়ে সহ্য করেছে যত দুঃখের অভিঘাত ? বিচ্ছেদের শ্রাবণ ধারায় করেনি নমিত ? আমি তো পারিনি। বরং আমিতো জানি, পত্রাবলী বলেনি যে কথা- বউঠাকুরানি , রানু, মিস ওকাম্পো , আর সেই মাদ্রাজ বাসিনী মেয়ে ! প্রথম চুম্বনে যার সিক্ত করেছিল ওষ্ঠ তোমার ? তখন কোথায় ছিল জীবন দেবতা ? বলে যাও, কি দিয়ে ঢেকেছ ক্ষত ? সন্ধান দিয়ে যাও সেই শ্যামলিম ঘাস- আমি তো পারিনা। লক্ষ বিষ পিঁপড়ের জ্বালা- নারী চলে গেলে। চৌকাঠে লাশ ভাসে একটা একটা রাত যায়, একটা একটা লাশ.. তুমি গান গাও; নিকষেতে ফুটে ওঠে সোনার আখর খানি । আমি জানি। বিরহ উপস্থিত সত্যের মতন। দুঃখ তবু ফিরে আসে নাচার ভিক্ষুকের মতো ফিরে ফিরে আসে শুধু বাইশে শ্রাবণ , নারী । *** |
নামাঙ্কিত
পার্থসারাথি ভৌমিক
কলকাতা, ভারত
জন্ম ওদের কাক-জ্যোৎস্না মাখা । | |||
তবু | হাতের উড়ান স্বপ্নডানা আছে । | ||
কিম্বা | মনন নিয়ে ছুটছে পায়ের হরিণ । | ||
কিম্বা | ভ্রমর- কালো চোখের মণি ,- পরশ। | ||
কিম্বা | কোকিল আলোয় অধর ভাষার পাঠ। | ||
কিম্বা | জিভ-টা সরে আঁকার খাতায় তুলি । | ||
কিম্বা | শিরদাঁড়া -টা সত্যসমেত ঋজু । | ||
মড়ার রক্তে বাঁচার কথা শিখেও- | |||
তবু | ওদের যদি প্রতিবন্ধী নাম | ||
-তর্জনী তুই বিপ্রতীপ -এ ফের ! |
দূরত্ব সাগর জামান |
|
দূরত্ব থেকেই যায় গাছেরা পুস্প পাতায় সজ্জিত হয় প্রেমিক প্রেমিকার নিবিড় নৈকট্যে তরঙ্গিত জলে মাছেরা অবাধ খেলা করে দূরত্ব ঘোচেনা তবুও দূরত্ব থেকে যায় আকাশে পুঞ্জ পুঞ্জ নীল আর সাদার আলিঙ্গনে দূরত্ব শূণ্য প্রেম নেই প্রেমের মধ্যে দূরত্ব আছে |