কার্তিকের কুয়াশা

গোপনাঞ্চল বিশেষজ্ঞ স্যানিটারি মিস্ত্রি
মূলঃ ইভগেনী পেত্রোসীয়ান
অনুবাদঃ সাইদুজ্জামান


আমার পেশাগত ভাবে গোপনাঞ্চলই কাজের স্থান। ট্যাপ মেরামত, সিংক বদলানো, কোথাও কিছু লিক করলে বন্ধ করা। আজকাল অনেকেই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। আমিও সিদ্ধান্ত নিলাম কি হবে মন খারাপ করে? লড়াই করতে হবে বেঁচে থাকার, অর্থ উপার্জন করার।
বিজ্ঞাপন দিলাম, যার দরকার, স্যানিটারি সার্ভিস দিব। এবং আমার টেলিফোন।
সব কিছুই নির্ভুল। কিন্তু ওরা, পত্রিকা কর্মীরা সব ওলোট পালোট করে ফেলেছে। আমার প্রস্তাব ছাপিয়েছে পাশের বিজ্ঞাপনের নীচে। আর ওখানে কোন এক নোংরা লোক যা প্রস্তাব করেছে! থু ফু, স্মরণ করতেই লজ্জা হয়। লিখছে, যে কোন বয়সের নারীদের অন্তরঙ্গ সেবায় নিয়োজিত। এবং আমার টেলফোন নম্বর।
কিন্তু আমি তো কিছুই জানি না এসবের। ঘরে বসে আছি, নৈশ ভোজ সারছি। ফোন কল আসা শুরু হল। নারী কন্ঠ জিজ্ঞাসা করছে,
- আপনি কখন আসতে পারবেন আপনার সার্ভিস বিষয়ে?
আমি বলি,
- এমনকি এক্ষুণি আসতে পারি। তবে আপনি এই রাতে চাচ্ছেন কেন? আগামী কাল আমার আছে সর্বমোট সাতটি কল। তারপর আপনার ওখানে যেতে পারি।
এবার মহিলা বলছেন,
- আপনি কি বলতে পারেন সাতটি কলের পর কিসের জন্য আমার দরকার হবে আপনাকে?
আমি বলি,
- ও ভা বে , ব ল বে ন না। আপনি আমাকে এখনো চেনেন না...এমনও হয় দিনে ১৬ জন খরিদ্দার কে সার্ভ করে থাকি। আগামীকাল প্রতিবেশিনী অনুরোধ করেছে তাকে সার্ভিস দিতে। ওর স্বামী ভদ্রলোক অসুস্থ। তবে প্রমিস করেছে অর্ধ লিটারের।
মহিলা বলছেন,
-জানেন, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আপনি আমার এখানে আসতে চাচ্ছেন শুধুমাত্র সাত সাতটা কলের পরেই নয় তার উপর মাতাল হয়ে?
আমি বললাম,
-আমাদের পেশায় এটা ছাড়া চলে না। কাজ করতে হয় প্রধানত স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায়, যা শারিরীক ভাবে খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এমনও হয় ঘাম বেরিয়ে আসে flange পাইপে ফিট করতে।
মহিলা বলছেন,
-আপনি অশ্লীল ভাষা ছাড়া কথা বলতে পারেন না?
আমি বলি,
-আর কিভাবে বলবো? Flange আফ্রিকাতেও flange. পাইপের কথা না হয় বাদই দিলাম।
এসময়ে মহিলা ফোন রেখে দিলেন। আশ্চর্য্য! ভাবছি, কি অদ্ভুত এ মহিলা। জীবনে কখনো পাইপ হাতে ধরে দেখেন নি নাকি?
আবার টেলিফোন বেজে উঠলো, একজন মহিলা জিজ্ঞেস করছেন,
-আপনার শ্রম কিভাবে পরিশোধ করা হয়?
বোকার মতো প্রশ্ন তাই আমিও বোকার মতো উত্তর দিই।
-নগদ টাকা অথবা বিনিময়। বস্তুর বদলে বস্তু, শ্রমের বদলে শ্রম। সেবার বদলে সেবা।
মহিলা বলছেন,
- আপনি বলছেন কি, এসবের পরও আপনি ইন কাইন্ড নিয়ে থাকেন ?
আমি বলি,
- কেন নেব না? যদিও একটা শ্রম অন্য শ্রমের সমতুল্য নয়। এক জিনিস ধরুন কানেকশান দেয়া, অন্য জিনিস প্যাড (ওয়াশার) বদলানো। তৃতীয়ত ট্যাংক পরিষ্কার করা। তাছাড়া এমনও হয় যে পরিশ্রমের কাজ, তার উপর দুর্গম স্থানে।
মহিলা বলছেন,
-কি রকম এমন দুর্গম স্থানে?
-কে জানে না কোন স্থানে? আমি বলি, যখন ধরুন নিষ্কাশন নালী ঠিক হাঁটুর উপর অবস্থিত। অথবা এমনও হয়, কোন এক বৃদ্ধার সাথে অর্ধ দিবস কেটে গেল। তার সিঙ্কে মরিচা ধরেছে। নীচ থেকে দেখতে গেলে বাবা গো !!
ওখানে একশ বছর কেউ চোখ তুলে তাকায় নি। সব জায়গায় moss জন্মে গেছে। বাধ্য হতে হয় স্টপার লাগাতে।
মহিলা বলছেন,
-আপনি তাহলে বৃদ্ধাদের কাছেও যান?
আমি বলি,
- ওদের থেকেই তো বেশী কল আসে।
এসময়ে এই মহিলাও ফোন রেখে দিলেন। ভাবছি এ কিরকম পাগলাগারদ মার্কা দিন আজ!
আবার টেলিফোন বেজে উঠলো। এবারেও নারী কন্ঠ। জিজ্ঞেস করছেন,
-আপনি কোথায় আপনার পেশা অর্জন করেছেন?
আমি বলি,
-কোথায় আবার? কারাগানদায়। আপনি খামোখা সময় নষ্ট করবেন না। আপনি আমাকে বরং বলুন, ঠিক কোন স্থানে আপনার ফাটল ধরেছে? আমি যাতে বুঝতে পারি ঠিক কোন ইন্সট্রুমেন্ট সঙ্গে নিতে হবে।
মহিলা বলছেন,
-আপনার কি একটি ইন্সট্রুমেন্ট নয়? নাকি?
আমি বলি,
-আমি কি আপনার কাছে ছেলেমানুষ যে একটি ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে বেড়াবো? আমার প্রতিটি সার্ভিসের জন্য নির্দিষ্ট ইন্সট্রুমেন্ট। বিভিন্ন ক্যালিবারের বলতে পারেন।
মহিলা বলছেন,
-কি দারুণ সার্ভিস। !!! আর আপনার কাছে কি সব ক্যালিবারই আছে?
আমি বলি,
- আমার যদি নাও থাকে পেত্রোভিচকে নিয়ে আসব। পেত্রোভিচ এমনিতেও পেনশানে আছেন। কিছুই করার নেই।
এসময় এই মহিলাও ফোন রেখে দিলেন।
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আজ কি ঘটছে!
হঠাত ঐ পত্রিকাটি চোখে পড়লো।
মাগো !!! কি যে ভাবলেন মহিলা, আমরা যখন ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে কথা বলছিলাম।
আমি বুঝলাম পেশা বদলানো দরকার। কারণ স্যানিটারি সার্ভিসে কল আসে অনেক অনেক কম।

Share on Facebook