নতুনের আর্জি
অরুণোদয় কুণ্ডু
হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ
ঘুম ভাঙে রোজকার মত তোমার আলো মেখে,
আজও সে আলোয় সেই একই উষ্ণ ছোঁয়া;
তবু আজ খুশির সকাল মিষ্টি কিছু বেশি!
সুন্দর আজ বান ডেকেছে সোনালি সাদা ধোঁয়ায়,
আঁধার শেষে রক্তিমের ওই সোনালি আলোর ছোঁয়ায়।
আজ এই আলোর সাথে আশা অনেক নতুন,
অনেক আগুন, অনেক ফাগুন, অনেক দৃঢ় মন;
অনেক আশা, ভালবাসা, অঙ্গীকার আমরন,
খেলবে খেলা এই সকালে প্রানের থেকে প্রানে।
আবার অনেক অভুক্ত পেট রঙিন পথের আলোয়
মেশাবে আজ নতুন সুর, দৈনন্দিন গানে।
কাটবে নেশা কারোর চোখে, মাতবে নেশায় কেউ;
কারোর বুক ভাসিয়ে দেবে দিলদরিয়ার ঢেউ।
তবু তুমি হাসবে মৃদু ভাবলেশহীন মুখে,
তোমায় দেখে কাব্য সবাই করব সুখে দুখে।
কখন তুমি সিঁদুররাঙা নীরব অভিমান,
রস্মি তোমার কখন আবার অগ্নিবীণার গান।
ভৈরবী আজ ভোর এঁকেছে, অনেক আশা মনে;
সেই আশাতেই কাটবে বছর, চলবে জীবন,
বাড়বে আশা মনের গোপন কোনে।
ছোট ছোট চাওয়াগুলো সব দিও রঙিন করে,
তোমায় নিয়ে ছন্দে ভাসুক, সময় ভেলায় চড়ে।
...............
পাপক্ষয়
কোয়েল সাহা
একটা অগোছালো আস্থিরতা ঘিরে ধরে,
কিছুটা বিষন্নতা, কিছুটা আলসেমি
কিছুটা অসহায়তা, কিছুটা একঘেয়েমি।
যে কাজ ই করি, থেকে যায় অসম্পূর্ণ
ধৈর্য্যের বাঁধে আজ ফাটল।
অদ্ভুত ভাবে ছেলেমানুষিগুলো,
ছোটবেলার অবুঝ মনের খেয়াল গুলো
ফিরতে চায় এই মৃত জীবনে,
বিপন্নতার জট পাকানো জ্বাল আটকে
গেছে, হাত, পা, মনে।
কৃত্রিম দৃষ্টির সহায়তায় সমস্ত দুনিয়াটা
আজ আমার কাছে, বেশ কাছে, কিন্তু আপন তো নয়
কঠোর জীবনে,’নিজের’ গোটা টাই ত্যাগ করতে হয়।
এতটা কাল এপথের আনাচে কানাচে ছিল
আমার দাপুটে চলাচল,
আজ একটা লাঠি ছাড়া,আমি ঘরের মধ্যেও বিকল।
আলগা করা দরজার দিকে চেয়ে থাকি অপলক
কারো পায়ের শব্দে কেঁপে উঠি
মন টা আজও আমার ‘বালক’।
সংসারের চক্রব্যূহে এত টা কাল ছিলাম
এক নিশ্বাসে, দম বন্ধ করে,
আজ শেষ জীবনে মন আবার যুদ্ধ চায়, প্রানভরে।
বৃদ্ধাবাসের ঘরে ঘরে, আমার সুজন
একমনে, এক সাথে গুনছি দিনক্ষণ
নতুন বছর আসবে, এই ভেবে নয়।
এ বছরে ও কি হলনা আমার ‘পাপক্ষয়’।
...............
বন্ধু
দেবাশিস পাঠক
বন্ধু মানে পিনপিসি, রাতবিরেতি ফোন
বন্ধু মানে পাগলা হাওয়া, নো টেনশন জোন।।
বন্ধু মানে সন্ধে বেলা, ফুচকা খেতে যাওয়া
বন্ধু মানে একটু পাওয়া, অনেক খানি দেওয়া।।
বন্ধু মানে, একটা বিড়ি, ১০ জনেতে টান
বন্ধু মানে নিষিদ্ধতা, লজ্জা খান খান।।
বন্ধু মানে ক্রস ওয়ার্ড, এলো মেলো ট্রাস্ট
বন্ধু মানে পরশপাথর, ভুমি, ক্যাকটাস।।
বন্ধু মানে হাত বাড়ালে, হাতটা খুজে পাওয়া
বন্ধু মানে চোখের জলে, মনটা চেয়ে নেওয়া।।
বন্ধু মানে মেঘলা দুপুর, শিশির ভেজা ভোর
বন্ধু মানে মনের মাঝে, সাজানো কৈশোর।।
বন্ধু মানে ভীষণ খুশি, অল্প অভিমান
বন্ধু মানে মনের মাঝে কফি হাউসের গান।।
বন্ধু মানে ছেলেবেলা, বন্ধু মানে স্কুল
বন্ধু মানে সুখস্মিতি, মনটা হয় আকুল।।
...............
মুগ্ধ
সাবরিনা সিরাজী তিতির
স্নান ঘরের আবছা সবুজ আলো
খুব নীল নীল মনে হয়
কোন সময় তা অরণ্য ছিলো !
মুগ্ধ চোখের অস্থিরতায় ভেসে যাওয়া লজ্জা
এখনো মানি প্ল্যান্টের শরীর লেপটে আছে !
আমিও আছি সেই স্মৃতিতে
এলোমেলো ভাবনায় ,
ভালোলাগার সরু সুতো উড়ে বেড়ায় এদিক সেদিক !
স্নানের জল ধীরে ধীরে চোখে গড়ায় ;
সে চোখে কিছু সুখ , কিছু অগোছালো মুহূর্ত
আর একটু তুমি ! মুগ্ধ তুমি !
...............