কার্তিকের কুয়াশা

এবারের টিপস:
কবিতার  জন্য নির্দিষ্ট কোনো শব্দ নেই, যে কোনো শব্দই কবিতার শব্দ - এ কথা মেনে নেবার পরের মুহূর্তেই বলতে হয় যে তবু প্রাত্যহিকের শব্দে আর কবিতার শব্দে কতই ভিন্নতা l  তবে কি ছন্দই এই ভিন্নতা এনে দেয় ?
~ শঙ্খ ঘোষ 


যদি একবার বলো
সনাতন দাস

আজ সবাই পালিয়ে গেছে,
যে যার অন্তরে,
দেহের বাইরে কেউ আসেনাতো আর,
এ শরীর মুখোশের মত ব্যবহারে,
ঢাকছে বেদনা নীল ।
জেনো, তবু আমি আছি, আমি আছি,
মনের আকাশ বুকে ভেসে থাকা চিল,
এক ছোঁয়ে তুলে নেবো জীবন্ত বেদনা,
সে আমার স্বপ্নিল আহার,
যা তোমার অন্তর পার হয়ে, ছুঁতে চায়
আমার চারণভূমি অনন্ত নীল ।

সকাল দুপুর পর, বিকালের শেষে,
সন্ধ্যাও পেরিয়ে এই মধ্য রাতে এসে,
জ্যোৎস্না মাখিয়ে, আজ প্রলেপের মতো,
শীতল হবে সে সকল ক্ষত ।
খোলা ডানা মেলে আছি,
মৃদু এ আলোর আকাশে ।
মনে আছে, আঁধার বিজয়ী এক আশা,
চলেছি পুবের পানে,
টুকটুকে কুসুম রাঙা, সোনালি
এক সূর্য এনে দেব তোমার গহনে।
শিশির মুকুট পরা, রানী গোলাপের মতো শুধু
তুমি একবার বলো বন্ধু,
'' আমি আছি, আমি থাকবো অপেক্ষায় '' ।।
          ***
ঃ অরন্য ক্রন্দন ঃ
শ্রীধর মন্ডল
(গ্রাম : বসন্তপুর, থানা: হরিণঘাটা, জেলা : নদিয়া)

বনস্পতি অরণ্য তার ছায়া তলে
প্রখর রৌদ্রের ক্লান্তি সবি যাই ভুলে।
জল বিনে শুকিয়েছে অরণ্য যখন
অম্বর কী বৃষ্টি দিতে পারে নাই তখন ?
সোনা মুখ বৃক্ষগুলি সব শুকায়ে গেল
অরনী শুকায়ে যেন মরুভূমি হল।
চেয়ে রয়েছি আমি ফনি মনসার ঝোপে
কোন অরণ্য দানব তারে কেটেছে কোপে ?
পরেছে তার শীর ভূ-তে লুটাইয়া
ক্রন্দন করছে ফনি তার বেদনায় বিভর হইয়া।
ইন্দ্র সভায় বৃক্ষ সব গেল বারির তরে
সেথায় দেখিনু ইন্দ্র, ম্যানকারে লয়ে নৃত্য করে।
জানালো বৃক্ষ সব তাদের কথা ইন্দ্র সভায়
শুনিয়া কহে ইন্দ্র, আমি কী করিব উপায় ?
ত্রাহিমাম ত্রাহিমাম করে বৃক্ষ সব
শুনে কহে ইন্দ্র, কেন বৃথা করিতেছ রব ?
দেখিতেছো না আমি বিশ্রাম লব
রম্ভারে নিয়ে আমি নৃত্য করিব।
তোমাদের অভিযোগ সব আমি শুনি
যাও ফিরে তোমরা এই স্থান হতে এখনি।
আমার যা করনিয় তা আমি করিব
তোমাদের সমস্যা আমি ভেবে দেখিব।
            ***

সময়
আবদুল হাকিম
ক্লার্কস লেইন, বাল্টিমোর, ইউ এস এ
[কবিতাটিতে ঈ, ঊ, ণ, ং, শ –এ পাঁচটি অক্ষর ব্যবহার করা হয়নি]

সময়টার সুরু যে কখন
জানা নেই।
সেষটা?
তাওনা।
আমি সুধু এক ঝলক পলক
কেটে যায় এমনিই।
প্রিয়ার মদির চোখ দুটোতে
হারিয়ে যেতে,
যদি কেটে যেত ।
অথবা
উত্‌সের খোজে।
সময়টা ধরা যেত
আমার ঝলক পলকে।
))))))))))))))))))))))))))))))))))))))))))

খেলা
কোয়েল সাহা

খেলবে নাকি, আমার সাথে?
দেখো,...আমায় নিয়ে খেলো না
খেলনা বেশী নেই , তবু ও
ফেলনা বলে ভেবনা।

কী খেলবে? ঠিক করেছ?
প্রথম দান হবে কার?
তুমি ই নাহয় শুরু কর,
শেষ দান টা হোক আমার।

বেশ খেলো তো!...বাহবা দিলাম,
বনেদী এক খেলোয়াড়...
তোমার খোঁজেই এতকাল
হচ্ছিল যে গাঁ উজাড়।

আর কত খেল দেখব, বল?
এবারে তো দান আমার,
জিতলে তুমি খুশী হবে
তাতে ও আমার নেইকো হার।

কী খেলা যে খেলেছিলে
বেহিসেবী নিয়মে...?
হেরে গিয়ে ও গা জোয়ারি???
অনেক হোল!!!...
......যাও থেমে!!!
            ***
হতাশার কবিতা
সাগর জামান

জীবন থেকে ক্রমশ:
হারিয়ে যাচ্ছে জীবনবোধ
ওষ্ঠে লেগে থাকে বিষাক্ত বিষাদ
সামান্য স্বাদ নেই
অপ্রতিরোধ্য হতাশার মধ্যে ডুবে যাই আমি
ভেসে যায় আমার জীবন।
প্রতিবন্ধকতা প্রচুর - এর মধ্যে
বেঁচে থাকা, অর্থহীন জীবন।
বিষণ্নতার ঘেরাটোপে বন্দী থেকে
এক সময় নিকোটিনে দগ্ধ করেছি বিদগ্ধ হৃদয়কে।
আমাকে কেউ বোঝে না, কেউ না ।
স্বজনদের কাছে
আমার অক্ষমতার অপরাধ অনেক
চারপাশে ঝাঁঝালো কন্ঠ
উত্তপ্ত কন্ঠস্বর
আমার হৃদ যন্ত্রের স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়
প্রবল উত্তাপ আর
প্রকট হতাশায় আমি পুড়ি
পীড়িত হই।
জানিনা আমার পরিত্রান
আছে কি নেই।
আমি একজন নিয়তি নিয়ন্ত্রিত মানুষ।
আমার প্রাপ্তির ঝুলিতে হতাশা
আর অপ্রাপ্তি ছাড়া কিছুই নেই ॥
         ***