কার্তিকের কুয়াশা

সম্পাদকের ডেস্ক থেকে
এ সংখ্যায় পূর্ববর্তী সংখ্যার পর্যালোচনা প্রকাশ করে কার্তিকের কুয়াশা গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ নিয়েছে l আত্মশুদ্ধির জন্য এ যেনো এক আত্মসমালোচনা বিশেষl শিবশংকর মন্ডলের লেখাটিতে সনাতন সমালোচকের চাবুকে লেখককে চাবকানো নেই, মর্মস্পর্শী সেরকম কোনো তিরস্কারও নেই, ভালোবেসে লেখকের কাছে পাঠকের সুন্দর সাহিত্যিক রচনার দাবিটি আছে l  লেখক-পাঠকের মধ্যে এক সেতুবন্ধনের মতই কাজ করছে কার্তিকের কুয়াশায় নতুন একটি পাতার এই সংযোজন  l
পাছে ভালো লাগার মৃত্যু হয় এই ভয়ে এমন কি প্রেমিক-প্রেমিকাকেও শুভবিবাহের গলা ধাক্কা  দিতে প্রায়ই দেখা যায় – ধারাবাহিক পড়তে গেলে পাঠকের বুঝি খানিকটা এরকমই প্রতিক্রিয়া হয় l এই ভয় শুধু পাঠকের একার নয়, লেখকেরও  l পরিণয়ের চেয়ে বরং কণেদেখা আলোটুকু বেঁচে থাকলে ছন্দে ছন্দে কি আনন্দে ধারাবাহিক দুটির ধারায় ধারায় প্রবাহমানতা প্রশস্তিময় হবেl  
ছোট গল্প পাতাটি নিয়ে শিবশংকর মন্ডলের হতাশা আমাদের বোধগম্য l  পাঠকের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে কার্তিকের কুয়াশা পরিবারে অনেকগুলো জামান আছে ঠিকই, তবে তাঁদের সবাই ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিত্ব, একই ব্যক্তির বিভিন্ন ছদ্মনাম নয় l  ‘রবিবারের রং কি’ আর ‘বান্ধব’ ছোটো গল্পটির লেখক একই ব্যক্তি নন l শিবশংকর খুব ভাল লিখেছেন, ‘পাঠক পরিষদের লেখায় যে কড়া সতর্কীকরণ ছিল সেখানে এই লেখাটি সম্পাদনার টেবিলে মঞ্জুরী পেয়েছে দেখলে অনেক প্রশ্ন জাগে।’ পাঠক পরিষদের লেখায় কড়া সতর্কীকরণ আছে নিশ্চয়, আমাদের পূর্বনির্দিষ্ট নিরূপিত ধরণকে লেখক কতটা তাঁর দৃঢ়মনস্কতায় গ্রহণ করছেন তার উপর বেশ নির্ভর  করছে লেখকের সাফল্য, আমরা তাই মনে করি । আর গ্রহণ না  করলেই  সম্পাদনার টেবিলে মঞ্জুরী পাবে না – আমরা সে দাবি করিনি । পাঠক পরিষদের কথাগুলো লেখক সৃষ্টি কে আরো একটু আয়ত্তগম্য করতে একপ্রকার টিপস হিসেবে বিবেচিত হলেই ভালো । লেখক এবং পাঠক উভয়কে সাহায্য করাই  আমাদের ব্রত । কার্তিকের কুয়াশার বিভিন্ন পাতায় সংযোজিত টিপসগুলো ক্লান্তিকর দীর্ঘ নিবন্ধ নয় বলেই পাঠকের দৃষ্টি বিশেষভাবে আকর্ষণ করবে বলে আমরা মনে করি।
‘বোধ’ গল্পটিকে কল্পগল্প বিভাগে রেখেছি, যা আসলে গল্পও বৈকি । গল্পের মূল বক্তব্য একটিই আর তা হলো মৌলিক কণিকা সমূহের বৈশিষ্ট্যগত ব্যবহার। তারা প্রত্যেকেই এক একটি consciousness যাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা রয়েছে। আর তারা যদি ঠিক করে তারা আর এ পৃথিবীর দিকে আসবে না তাহলে অচিরেই পৃথিবীর প্রাণ অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। কারণ তারাই প্রাণশক্তির যোগানদাতা। লেখক এ গল্পে চাবি হারানোর যে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন তা আসলে, এক ডাইমেনশান থেকে অন্য ডাইমেনশানে বস্তুর স্থানান্তরের একটি উদাহরণ মাত্র । হতে পারে বস্তু নিজেই তা সম্পাদনে সক্ষম বা অন্য কেউ তা ঘটিয়ে থাকতে পারে, যারা অন্য ডাইমেনশানের হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সাথেই সহ অবস্থানে উপস্থিত রয়েছে এবং এ কাজগুলো করে যাচ্ছে নীরবে শুধুমাত্র আমাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য, যা আমাদের বোধগম্যের উর্ধ্বে । জিসান তেমন একজনই যে অন্য ডাইমেনশান থেকে আগত অন্য গ্যলাক্সির বাসিন্দা, সভ্যতার দিক দিয়ে হাজারো বছর এগুনো। তার কাছে এ পৃথিবীর মানুষেরা এখনো সভ্যতাহীনতার অন্ধকারে নিমজ্জিত । তাদেরকে পথ প্রদর্শনের জন্যই তার আগমন । এতো পিছানো সভ্যতার মানব জাতির সাথে প্রেমের সম্পর্ক কি সম্ভব হতে পারে? আমরা জীব জন্তুদের কি ভাব বিনিময়ের উপযুক্ত মনে করি? নিশ্চয়ই নয় । আসলে গল্পের পিছনে এই বিষয়গুলো অর্থাত অন্য ডাইমেনশানের অন্যগ্রহের হাজারো বছরের উন্নত সভ্যতার মানুষের উপস্থিতি ও তাদের চিন্তা ভাবনাকে কেন্দ্র করে লেখকের কিছু লিখতে চাইবার প্রচেষ্টা থেকেই হয়তোবা ‘বোধ’ গল্পটি হঠাত করে বোধগম্য হতে কষ্টকর হয়েছে।
ই –বুক পাতাটির নাম বদলে পাঠাগার করা হলো । সাধারণ সাহিত্য সাময়িকীতে পাঠাগারের অবস্থান সাধারণত থাকে না, তবে ইলেকট্রনিক্স এর এই বাড়তি সুযোগ কেনই বা হাতছাড়া করি? একজন ভালো লেখক প্রথমে অবশ্যই একজন ভালো পাঠক । কার্তিকের কুয়াশায় ভালো একটি ই– লাইব্রেরি যে খুব উপযোগী, তা না বলা অসম্ভব  ।
আব্দুল হাকিম বানানের উপর একটি  বই লিখেছেন যা আমাদের পাঠাগারে আছে। প্রবন্ধ সঙ্কলন-বাঙলা বানানে ভাইরাস বইটি পড়লেই লেখকের যুক্তি বেশ খানিকটা জানা যাবে । তাঁর যুক্তিকে ফেলে দেওয়া অনেকটাই অসম্ভব ।
এ সংখ্যার পর্যালোচনা আশা করি পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশ পাবে ।
 
চঞ্চল জামান
টরন্টো, ক্যানাডা, ৩১ অক্টোবর, ২০১১
editor@kartiker-kuasha.nauba-aloke-bangla.com